সিলেটে সম্পত্তির লোভে পিতাকে পাশবিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে ছেলের বিরুদ্ধে। নিজের ছোট ছেলের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ তুলেছেন গোলাপগঞ্জ উপজেলার পূর্ব ফুলসাইন্দ গ্রামের নিবাসী হাজী সুয়াই মিয়া (৭২)।
বুধবার সিলেট জেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার ছোট ছেলে জসিম উদ্দিনের (৩৫) বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন।
সুয়াই মিয়া জানান, পারিবারিক জীবনে তিনি ৩ ছেলে ও ৪ মেয়ের জনক। বড় দুই ছেলে প্রবাসে থাকেন এবং সকল মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার পর তারা তাদের স্বামীর সংসারে রয়েছেন। গত ১৪ ডিসেম্বর রাত ৮টায় আমার ছোট ছেলে জসিম উদ্দিন ভাই-বোনের সম্পত্তি তার একার নামে করে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। ভাই-বোনের অংশ তার একক নামে লিখে দিতে অপগরতা জানালে আমাকে মারধর করে একটি রুমে তালবদ্ধ করে সম্পত্তির সকল কাগজপত্র, পাসপোর্ট ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যায়। পরে প্রতিবেশিরা তালাবদ্ধ ঘর থেকে আমাকে উদ্ধার করেন।
তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় পরের দিন গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় জিডি করতে গেলে ওসি জিডি/অভিযোগ গ্রহণ করেননি। এরপর গত ১৭ ডিসেম্বর সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি ও পুলিশ সুপার বরাবর একটি লিখিত একটি অভিযোগ দাখিল করি। ওইদিন সন্ধ্যা ৭টায় এলাকার কিছু লোক নিয়ে ছেলের কাছ থেকে সম্পত্তির দলিলপত্র ও পাসপোর্ট আনার জন্য ছেলের কাছে গেলে আবারো আমাকে মারধর করে। এ সময় প্রতিবেশিরা আমাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করান।
এ ঘটনায় ১৯ ডিসেম্বর সিলেট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ২নং আদালতে মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালত পিটিশন মামলাটি আমলে নিয়ে গোলাপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দিয়েছেন। (মামলা নম্বর: গোলাপগঞ্জ সি আর ৪৯৯/২০২৪ইং, ধারা- ৩৪২/৩২৩/৩০৭/৩৮০/৫০৬(২) দন্ডবিধি।)
মামলা করার পর থেকেই অভিযুক্ত জসিম স্থানীয় যুবদলের এক নেতার সেল্টারে আরো বেপরোয়া হয়ে উঠছে।
তিনি আরো জানান, এর আগে ২০২০ সালেও জসিম জোরপূর্বক সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়া জন্য আমাকে মারধর করে গুরুত্বর আহত করে। তখনকার সময়ে নিরুপায় হয়ে গোলাপগঞ্জ থানায় অভিযুক্ত ছেলে জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দাখিল করলে পুলিশ ও স্থানীয়দের মধ্যস্থতায় বিষয়টি মিমাংসা হয়।
সুয়াই মিয়ার ছেলের সাথে কোনোভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে গোলাপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান মোল্লা জানান, তিনি আমার বিরুদ্ধে যেই অভিযোগ এনেছেন, সেটা একদমই মিথ্যা। কেউ অভিযোগ করলে আমরা সেটা নিবো না কেন। বাপ-ছেলের বিষয় নিয়ে তার ওই বাবা আসছিলেন। আমি উনাদের বিষয়টা সমাধানের জন্য বলি। কারণ, বাবা-ছেলের সম্পর্ক একবার নষ্ট হলে ওই পরিবারে আর শান্তি থাকে না। এই সম্পর্ক নষ্ট করার জন্য দেখেছি উনার কিছু ভাতিজারা চেষ্টা করছে। আমি তদন্তের জন্য আমার একজন অফিসারকেও পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু, তিনি তার কয়েকজন ভাতিজার কূটকৌশলে বিষয়টিকে ঘোলাটে করার চেষ্টা করেছেন।